রুশা চৌধুরী
পূনর্জন্মের বহু আগেই
সে জন্মেছিল।
তবু আজ,
সকাল থেকেই পাখীরা তাদের
হালকা কথাগুলো
খুব দ্রুত শেষ করেছে নিয়েছিলো।
এখন খুব ব্যস্ততার সুরে
তারা একটা আনকোরা নতুন গান গাইছে।
পথ জুড়ে আজ শুধু গুচ্ছ গুচ্ছ লাল,
সবুজ,হলুদ, নীল আলোর সাজ।
সেই রঙের কিছু কুড়িয়ে, কিছু এড়িয়ে
হেটে যাচ্ছে নানা বয়সী মানুষ।
তাদের মুখোশ আটা
মুখগুলোতেও আজ উজ্জ্বল আভা।
সবার হাতে, মুখে,চোখে বা মনে
একটু হলেও
আজ রঙের ছোঁয়া।
অনেক কথা আজ বারবার মনে পড়ছে তার।
নিটোল, মসৃণ, এমন আলোকময় জীবন....
সে তো জন্ম থেকে পায়নি।
তার সে সময় যেন থমকে আছে আজো,
দূরতম কোনো এক নক্ষত্রের কাছে।
নবজন্মের প্রস্তুতির সেই ভয়ানক জঠর যন্ত্রনা।
জীবন,ভালবাসা,রক্ত,আত্মাহুতি, কী নেই তাতে?
সেই কাঙখিত জন্মের অমোঘ বার্তা,
প্রসব বেদনার মতোই,
আনন্দময় এক কষ্ট ছিলো যেন।
সে আজ তার স্মৃতির বাক্স থেকে বহু পুরনো
একটা শাড়ী বের করে শরীরে জড়ায়।
চোখ বন্ধ করে ঘ্রাণ নেয়........
সেখানে ফেলে আসা গল্পেরা
সব ভাজে ভাজে সাজানো।
লক্ষ, লক্ষ গল্প......
বহু দ্বিধাগ্রস্ত চিঠি,না ফেরা সন্তান
মৃত স্বজন, সাহসী যোদ্ধা, ধর্ষিতা মা, বোন,
মুখ ফিরিয়ে নেয়া আপন জন।
সবগুলো গল্পই তার বড্ড আপন, চেনা।
সে শরীরে জড়িয়ে নেয় সেই গল্পগুলো
পরম মমতায়।
সেই যে অভিমন্যুদের দল,
যাদের সপ্তরথ ছিলো না,
ছিলো শুধু ভালবাসা।
রক্ষাকবচ ছিলোনা, ছিলো অদম্য সাহস।
দুচোখ বন্ধ করে সে মনে করে তাদের কথা।
এই সব ভালবাসার সমুদ্র মন্থন করেই
তার এই অমৃত জন্ম।
এলোচুল বেধে সে চোখ মেলে চায়
পরম মমতায়,
তার বেচে থাকা সন্তানদের দিকে।
ভালোবাসার নিঃশ্বাস বয়ে যায়,
বাতাস হয়ে,দেশ জুড়ে।
0 মন্তব্যসমূহ