খোদার দরবারে
নয়ন হাসান
তিনদিন যাবৎ খেতে পাইনি বলিয়া,
নাদের মুন্সি হাত তুলিল খোদার দরবারে;
“হে খোদা” মোর বধূ-সন্তানেরাও,
না খেতে পেয়ে পড়িয়া আছে ভাঙা ঘরে।
মাটিকাটা কাজ করিয়া আমি, যোগাইতাম তাদের অন্ন;
দিলে তুমি মহামারী-অতিবৃষ্টি, ছাড়িল মোর ছন্ন।
মাটিকাটা কাজ বন্ধ হইল, একপয়সাও নাই হাতে;
গত শুক্রবারে চাল চাপিয়াছিল, লালচে মাটির হাড়িতে।
তারিপর হইতে পেরোল তিনদিন, অভুক্ত রহিলাম মোরা;
ক্ষুধা-তৃষ্ণায় নিজ বুকে, মারিতে ইচ্ছে করিতেছে ছোরা।
পাশের বাসার চৌধুরীরা, আহার্য ফেলে রোজ ডাস্টবিনে;
মোদের পানে তারা চাহেনা ভুলেও! ভীষণ এই দুর্দিনে।
লাজ-লজ্জা ভুলিয়াও যদি, হস্ত বাড়াই ওদের কাছে;
বলে দূর-দূর সরিয়া যাও, কীভাবে আসিলে মোদের মাঝে?
হপ্তাহে দু’বার পার্টি করে, কত শত রং-তামাশায় মাতে;
ছোট্ট-ছোট্ট ছেলে-মেয়েরা মোর, তা দেখে দাড়াইয়া পথে।
ভুঁজে ওরা বিরিয়ানি-পোলাও, ভুঁজে ভিনদেশী সব খাদ্য;
খেতে না পেয়ে, গৃহে বসিয়া মোরা রচনা করি পদ্য।
নগণ্য অসুখে নাড়ি টেপা লাগে! আরও কতরকম সব ফন্দি;
অসুখে ধুঁকে-ধুঁকে মরি মোরা, তবুও জোটেনা ডাক্তার-বদ্যি।
এভাবে আর কতকাল প্রভু? আর কতদিন অনাহারে থাকিয়া;
ভোগ করিবোনা কি কিছুই মোরা, যাবো শুধু দেখিয়া?
0 মন্তব্যসমূহ