সর্বশেষ

10/সর্বশেষ/ticker-posts

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কেন করা হয়?


ঘুর্নিঝড়ের নামকরণের ইতিহাস
 

ঘূর্ণিঝড় একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বছরের নভেম্বর কিংবা মে মাসের দিকে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। দেশের আবহাওয়া অধিদফতর ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে ২০০৭ সাল থেকে। এর আগে একটা সময় ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোনের নামকরণ হতো না। 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্ন চাপটি ছোট ঘুর্ণিঝড়ে পরিনত হয়ে শক্তি সঞ্চার করে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়ে আছড়ে পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে। 

২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়লেও এর নামকরণ হয়েছিল আজ থেকে ১৬ বছর আগে। অর্থাৎ ২০০৪ সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সভায় আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরের সাইক্লোনের নামকরণ নিয়ে একটি ঐকমত্য হয়। তখন এ অঞ্চলের ঝড়ের নাম দেওয়া শুরু হয়।
তবে এই তালিকায় এই নামটিই সর্বশেষ ঘুর্নিঝড়ের নাম। 
 বিভিন্ন সময় আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করা হয়। যেমন- সিডর, আইলা, মহাসেন, রোয়ানু, মোরা, নার্গিস, ফণী ও বুলবুল ইত্যাদি। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে ‘আম্ফান’।

ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বলা হলেও আটলান্টিক মহাসাগরীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় হারিকেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বলা হয় টাইফুন। প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরের ক্ষেত্রে নাম রাখার প্রথা অনেক আগে এসেছে। ১৯৫৩ সালে শুরু হয় হারিকেনের নাম দেওয়া। প্রথম দিকে মেয়েদের নাম বেশি দেয়া হতো। পরে ছেলেদের নাম প্রাধান্য পায়।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা আঞ্চলিক কমিটি একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে। ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই সংস্থার আটটি দেশ। দেশগুলো হচ্ছে: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, 
মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ওমান।
বঙ্গোপসাগর আর আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০০৪ সালে। ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওমান, মায়ানমার ও থাইল্যান্ড- এই আট দেশ মিলে ৬৪টি নামের তালিকা তৈরি করা হয়।


মুক্তিযুদ্ধের ঠিক আগে পূর্ব পাকিস্তানে ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল জোরালো ঘূর্ণিঝড়। তারও কোনও নাম ছিল না। ভোলায় আছড়ে পড়েছিল, সেই জায়গার নামেই চেনে দুনিয়া।ভোলায় এ ঘুর্নিঝড় আছড়ে পড়েছিলো বলে সেই স্থানের নাম অনুসারে ঘুর্নিঝড়টির নাম করন করা হয় ভোলা ঘুর্নিঝড় । ১৯৯১ সালের ঘূর্নিঝড় নিহতের সংখ্যা বিচারে স্মরণকালের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড়গুলির মধ্যে একটি। ১৯৯৯ সালে ওড়িশা তছনছ করে দেয়া ঘূর্ণিঝড়কে লোকে চেনে পারাদ্বীপ সাইক্লোন নামে। কারণ, ওড়িশার এই বন্দর শহরেই আছড়ে পড়েছিল শক্তিশালী তুফান।

বঙ্গোপসাগর আর আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০০৪ সালে। ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওমান, মায়ানমার ও থাইল্যান্ড- এই আট দেশ মিলে ৬৪টি নামের তালিকা তৈরি করা হয়।

২০১৪ সালে ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিকাল অর্গানাইজেশন এবং এসক্যাপের অধীনস্থ আটটি দেশ দক্ষিণ এশিয় অঞ্চলের সাইক্লোনের নামকরণ করে। দেশগুলো হলো- ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, এবং থাইল্যান্ড।
প্রতিটি দেশ তাদের নামের তালিকা পাঠানোর পর তা চূড়ান্ত করে প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোন (PTC)

২০১৮ সালে এই দলে প্রবেশ করে আরও পাঁচটি দেশ। সেগুলো হলো- ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইয়েমেন। 

আটলান্টিক মহাসাগরের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে প্রথম নাম রাখার প্রথা চালু হয়। যেসব ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩৯ মাইল ছাড়িয়ে যেত, তাদের বিশেষ সম্মান জানাতে নামকরণ করা হতো। ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ৭৪ মাইল ছাড়িয়ে গেলে হারিকেন, সাইক্লোন, বা টাইফুন হিসেবে ভাগ করা হতো। বর্তমান যুগে এই তিনটির একটি হলে তবেই কোনও ঝড়কে নামকরণের সম্মান প্রদান করা হয়।

ঝড়ের নাম বাছিয়ের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হয় সেটি যেন কোন ধর্মীয়,সাংস্কৃতি কিংবা সামাজিকভাবে কোন প্রকার ক্ষোভ অথবা বিতর্ক সৃষ্টি না করে৷ 

উদাহরন হিসেবে বলা যেতে পারে ২০১৩ সালে একটি ঘুর্নিঝড়ের নাম দেওয়া হয় মহাসেন৷'মহাসেন' নামটি  প্রস্তাব করেছিলো শ্রীলংকা।সেখানকার সাবেক এক রাজার নাম ছিলো মহাসেন যিনি ঐ দ্বীপের সমৃদ্ধি নিয়ে এনেছিলেন। এতে ক্ষোভ এবং বিতর্ক তৈরী হয়৷এবং শ্রীলংকান গণমাধ্যমগুলো উক্তঘুর্নিঝড়টিকে নামবিহীন ঘুর্নিঝড় হিসেবে আখ্যায়িত করে। পরবর্তিতে উক্ত ঘুর্নিঝড়ের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় 'ভিয়ারু।'


তথ্যসূত্র-ইন্টারনেট। 









একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ