তিন কবিতা
দীপঙ্কর শীল
১.
এসো তরুণ
যদি ভয় করো তরুণ
নিপীড়িত হবে জনগণ,
হাতে নাও ন্যায় দন্ড
ছুঁয়ে যাও সততার পণ।
অন্যায় সম্মুখ বিক্ষুব্ধ হও তরুণ
সমাজ কুলষিত জ্ঞানপাপীর থাবায়,
তুমি জেগে উঠো অসহায়ের কাছে
মিথ্যার শৃঙ্খল করো চূর্ণ সত্য ভালোবাসায়।
ধনী-দরিদ্র বৈষম্যে, তুমি এসো তরুণ
নির্যাতিত গরীবের সম্ভ্রম লুন্ঠিত,
গর্জে উঠাইয়া তোমার বিবেক
নিষ্ঠুরতা করো সংহার, ওরা উপেক্ষিত।
তুমি উত্তপ্ত রক্তে বলিষ্ঠকায় তরুণ
মানবরুপী হিংস্রতায় রক্তাক্ত নারী দেহ,
আমাদের বোন, নারী যে মায়ের প্রতিরুপ
এসো এঁকে দিই নিরাপদ সম্মানচিহ্ন।
ভেঙ্গে দাও রুদ্ধ মানবতার দূর্গ হে তরুণ
ঐ যে তাকিয়ে দেখো রক্তারক্তির মানচিত্র,
শাসকের মাঝে শোষিত বেঁধেছে দল
ক্ষুধার্ত পথশিশুর আর্তনাদ নয়নজলে সিক্ত।
দুই.
নিঃশব্দ নিঃশ্বাস
তোমার হাসি সমুদ্রের ঢেউ-তোলা জল
হৃদয়ে কাল বৈশাখীর আস্ফালন,
নিভৃতে নিঃসঙ্গ শয়নে বর্ষণময় অনুভূতি
এসে দেখে যাও তোমার অপেক্ষায় প্রতি ক্ষণ।
তোমার নয়ন চাহনি শ্রাবণের ভেজা পাপড়ি
প্রেমাস্পদ ছোঁয়ার তপ্ত সরোবর,
গাহিত হবো যদি পরশ দাও
খোঁপা খুলে হারাবো দুজন বহু দূর।
তোমার উষ্ণ মনের বহমান নদী
বহুক্ষণে ডাকে বিলীন হতে মোহনায়,
পবিত্র ঠোঁটের নির্যাস প্রেম তরীতে
হস্তলিপি রেখে যাই স্বপ্ন নিদ্রায়।
তোমার অর্পিত নিঃশব্দ নিশ্বাস স্বর্গাভিমুখ
বহুদূর পথ, তবু পরশের খোঁজে,
পৌষ কুয়াশাচ্ছন্ন রজণীতে বক্ষাস্থি চায় যেতে
মিশ্রিত মৌন ভালোবাসার কোমল সমুদ্রে।
তিন.
লাল টিপ
সন্ধ্যালোকেও খুঁজেছি তোমায়
হৃদয় নদীর গভীরে, দেখি তুমি নেই,
ছুটে আসি দীর্ঘশ্বাসের অভ্যন্তরে
দেখি কোমল পাপড়িরুপে সেই তুমি।
রজণীর তন্দ্রা হীনতায়ও খুঁজেছি তোমায়
বিষণ্ণ ক্ষণের পরতে পরতে, তুমি ছিলেনা,
শ্রাবণের কান্নায় দাঁড়িয়ে দেখি বারান্দায়
তুমি আছো ঐ দূরে সুখের কাননে।
কবিতায় বারংবার খুঁজেছি তোমায়
কখনো শিরোনাম ছিলে, কখনো চরণ,
যদি আবার এসো ক্ষণতরে
ঢেউ তোলা বেনী করে, দিও লাল টিপ।
আমি স্বপ্নরাজ্যের জলপাতায় এঁকেছি তোমায়
ঐ নীল নয়ণের তারায় বিস্তৃত করেছি রং ,
বাসনা ছিলো করিবো বাস, তব অন্তর কুটিরে
তুমি এসো, চৈত্রের তপ্ত মনে আমি অপেক্ষার্থী।
0 মন্তব্যসমূহ