০১
ভালোবাসলে গাছ হতে হয়
প্রেম এখনো ইনস্ট্যান্ড নুডুলসের মতো সহজলভ্য না;
যাতে এককাপ গরম পানি ঢাললেই-হয়ে যাবে সুখাদ্য!
যদি তুমি প্রেমে পড়তেই চাও
তবে তোমাকে আগে জীবন্ত একটা গাছ হতে হবে
মাটির খুব গভীরে শেকড় ছড়িয়ে তোমাকে দাঁড়াতে হবে
ঝড়ো বাতাসকে মোলায়েম ভাবে আলিঙ্গন করতে হবে
সুনীল আকাশকে তুমি ছুঁয়ে থাকলেও
তোমাকে নিচু হতে হতে কুঁজো হতে হবে; মাটির কাছে
সবুজ সবুজ পাতায় সয়ে যেতে হবে বেদনার বিউগল
কোষ্ঠকাঠিন্য বুকে সইতে হবে বোটাখসা পাতার কান্না।
যদি তুমি সত্যি সত্যিই প্রেমে পড়তে চাও,
তবে তুমি নিবিড়ভাবে শুধু আমাকে দ্যাখো
আবিষ্কার করো আমার শেকড়ের গভীরতম প্রার্থনা,
ঐকিক নিয়মে বের করো আমার বেদনার দৈর্ঘ্য প্রস্থ
জ্যামিতিক সূত্রে বের করো আমার প্রতীক্ষার বয়স
তারপর তুমি যাচাই করো নিজেকে, তুমি যোগ্য কিনা?
দ্যাখো,
গাছের মত নির্বাক শ্রোতা হয়ে সয়ে যাচ্ছি তার অবহেলা
গত শতাব্দী থেকে প্রিয়জনের বিশুদ্ধতম ঘৃণা সহ্য করছি!
তুমি প্রেমিক হতে চাইলে-অবশ্যই তোমাকে গাছ হতে হবে
ব্যথার বিষটুকু কার্বন ডাই অক্সাইডের মত গিলে খেতে হবে
কেউ যদি তোমার বুকে টুকটুক করে প্যারেকও মারে
তবুও তোমাকে সয়ে যেতে হবে যন্ত্রণার নীল বিষ;
তোমাকে অবশ্যই অবশ্যই গাছ হতেই হবে।
দ্যাখো,
আমিও কালক্রমে মানুষ থেকে প্রেমিক হয়েছি
অতঃপর প্রেমিক থেকে গাছ হয়ে গেছি
ভালোবাসলে তো গাছ হতেই হয়।
০২
বেঁচে থাকার টোটকা দিলাম
বিড়ালের পা ধরো যদি- চলে যাবে গলার কাটা,
আরো এমন টোটকা আছে- যন্ত্রণাকে মারবে ঝাঁটা!
গোপন কষ্টে কুঁকড়ে গেছো? অস্থির তুমি মনের ব্যথায়?
সেই মানুষের অবহেলা; ভীষণরকম তোমায় কাঁদায়?
আমার কাছে টোটকা আছে, নিবে যদি হাতটা বাড়াও
তোমার বুকে গুপ্ত হাসি, মুচকি হাসিতে দুঃখ তাড়াও।
অট্টহাসিটা দিয়েই দেখো- ধ্বংস হবে ব্যথার বাঙ্কার
দম ফাটানো হাসির শব্দে- কষ্ট পুড়ে হবে ছারখার।
আরো কিছু টোটকা দিবো, বেদনা পুড়ে হবে খাক
ব্যথার ঘরে আগুন হাসো, কষ্টগুলো ছাই হয়ে যাক।
বন্ধু, তোমার ঠোঁটের পাশে ঝুল হাসিটা ধরে রেখো
রোজ নিশিতে কষ্ট এলে- হাসির কিছু সৈন্য ডেকো।
তাজা আরো টোটকা আছে- নিবে,বন্ধু? ধৈর্য্য ধরো,
দুঃখ-কষ্টের সেই আসরে- দমের হাসির গপ্পো করো।
নিঃসঙ্গতার বিকেলগুলো বিষন্নতার এক চোরাবালি
মন খারাপের দৈত্য এলে-তার মুখে দাও হাসির কালি।
বিড়ালের পায়ে ধরলে শেষে- উধাও হবে গলার কাঁটা
স্বয়ং মাছের ঈশ্বর বলেছে,'মানুষ, এবার জীবন কাটা।'
০৩
তোমার খুব শুশ্রূষা প্রয়োজন
আমার বুকের খাঁচা সেই কবে থেকে মোচড়ানো
হাড়গোড় অস্থিমজ্জা তালতক্তার মত শুধু মার খায়
মুমূর্ষু মনের অলিতে গলিতে কষ্টের মৌন মিছিল
বেদনায় বিধ্বস্ত মন নির্বাক শ্লোগান দেয়
নীরব ব্যথাগুলোর আমৃত্যু অনশন চলছে।
তোমার সমৃদ্ধ অবহেলায় আমার বুকের ধুকপুকানি
ধীর হয়ে গেছে সেই কবে!
অভিমানী হৃদযন্ত্রটাও বিকল হবার যোগার...
তবুও তোমার প্রতীক্ষায় তোমার সামনে বসে থাকি
ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড শরীরে গাছের মত দাঁড়িয়ে থাকি
যদি কখনো তুমি আবার ফিরে আসো আমার কাছে
তুমি আলতো হেসে আমার ঠোঁটের কোণ থেকে
প্রতীক্ষার যন্ত্রণাগুলো মুছতে মুছতে বলবে,
'তোমার খুব শুশ্রূষা প্রয়োজন!'
পলাশ, নরসিংদী।
ভালোবাসার কবিতা (Valobasar kobita) গুলো আপনার ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন । এছাড়াও আমাদেরকে লিখে পাঠাতে পারেন (প্রেমের কবিতা-Premer-kobita)
0 মন্তব্যসমূহ