সর্বশেষ

10/সর্বশেষ/ticker-posts

কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে: পঞ্চম পর্ব

 


 

গৌতম সরকার


আমি ছেলেটির মাথায় পরম মমতায় হাত বুলাতে বুলাতে নিজেকেই প্রশ্ন করলাম আচ্ছা সত্যিই আমি যদি সরকারের লোক হতাম তাহলেও কি ছেলেটিকে মাঝপথেই নামিয়ে দেওয়ার কোন ক্ষমতা আমার ছিল! যদি বা থাকত তাহলে সেটা কি সরকার বিরোধী তথা মনুষ্যত্ব বিরোধী কাজ হতো না? আপাত দৃষ্টিতে এদের ভালোর জন্যই তো সরকার এই পথ অবলম্বন করেছে। তাহলে? নিজেই নিজের মনকে সান্ত্বনা দিয়ে মনের পাপবোধকে একটু কমানোর চেষ্টা করলাম। ছেলেটিও এর মধ্যে নিজেকে কিছুটা ধাতস্থ করেছে। আমি ওকে বোঝালাম নিজের পরিবারের ভালোর জন্যই ছেলেটির তাদের থেকে দূরে থাকা দরকার। তার বাবা সাধ্যের বাইরে গিয়ে মানুষের মতো মানুষ বানানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সে তার কোন মূল্য দেয়নি। আর্থিক এবং মানসিকভাবে সে তার পরিবারকে নিঃস্ব করেছে। হয়ত তার দেওয়া এই আঘাত সহ্য করে নিয়ে তিনি আবার আস্তে আস্তে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই সময় সে যদি তার পরিবারের কাছে ফিরে যায় তাহলে তাদের বিপদ বাড়বে বই কমবে না। সুতরাং সকলের মঙ্গলের জন্যই তার এই পথেই যাওয়া সমীচীন। পৃথিবীর বুক থেকে যখন এই মারণ ব্যাধির কালো ছায়া সরে যাবে, তখন আমরা সকলেই আবার আমাদের নিজেদের আত্মীয় পরিজনের সাথে মিলব। তার আগে পর্যন্ত না চাইলেও এই বিচ্ছেদ আমাদের মেনে নিতে হবে। ছেলেটি মন দিয়ে আমার কথা শুনলো, নিজের চোখের জল দুহাতে মুছে নিল। নিজের মনকে শক্ত করে বলল, স্যার, আপনি ঠিকই বলেছেন। ভালো যখন করতে পারিনি তখন মন্দ করার কোন অধিকার আমার নেই। স্যার ডাকটা আমার কানে খুব বাজল। কিন্তু কি করব? আমি তো এখন ওদের কাছে সরকারের প্রতিনিধি! ছেলেটিকে শান্ত করে আমি পায়ে পায়ে আমার নির্দিষ্ট সিটে এসে বসলাম। দেখলাম সামনের মাসিমা উদাস দৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছেন। আমার উপস্থিতিতে যেন উনি আবার বাস্তব জগতে ফিরে এলেন। আমার এই সরকারি পরিচিতি সকলের ব্যবহারে পরিবর্তন আনলেও ওনার মধ্যে কোনও পরিবর্তন আনেনি। আমাকে দেখে বললেন, “আচ্ছা তুমি কি সত্যি করে আমাদের সবাইয়ের দেখভাল করার জন্যই এসেছ?" আমি হ্যাঁ আর না এর মাঝামাঝি একটি অভিব্যক্তি দিলাম। আসলে মাতৃস্থানীয়দের সামনে মিথ্যা বলার অভ্যাসটা এতদিনেও ঠিক রপ্ত করতে পারি নি। আর সত্যিটাও বলতে পারছি না। উফ্ মিথ্যা বলার কি বিড়ম্বনা! হঠাৎ ছোটবেলার সেই কথাটা মনে পড়ে গেল, একটা মিথ্যা ঢাকতে গিয়ে হাজারটা মিথ্যা বলতে হয়। মিষ্টি করে হেসে মাসিমা আমার বাড়ীর কথা জিজ্ঞাসা করলেন। আমিও যতটুকু সম্ভব গুছিয়ে বলার চেষ্টা করলাম। আর সত্যি করেই আমার মতো বাউন্ডুলের কি সত্যিই বলার মতো কোনো জীবন আছে! একজনই ছিল, যার জন্য কিছুটা পিছুটান ছিল সেও চলে গেল, এখন আমি মুক্ত। তাই তো আমার এই অনিশ্চিতের পথে যাত্রা। যদি ফিরি ভালো আর যদি না ফিরি তাহলেও দু-ফোঁটা চোখের জল ফেলার মতো কেউ নেই। "এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়”৷

 

আপনি যদি ট্রেনের সিটে বসে বাইরের দিকে তাকান তাহলে দেখবেন বাইরের পৃথিবী চলমান, আপনি স্থির। আবার যদি বাইরে থেকে ট্রেনটিকে দেখেন তখন মনে হবে ট্রেনটি চলমান, বাইরের পৃথিবীর সাথে আপনি স্থির। অর্থাৎ আপনার চারপাশের পৃথিবী আপনার অবস্থান নির্ধারণ করবে বা আপনার অবস্থান বাইরের পৃথিবীর গতিবর্ত নির্ণিত করবে। আর আপনি যদি বাইরের দিকে তাকানো বন্ধ করে দেন; নিজের অবস্থা নিয়েই সদাব্যস্ত হয়ে পড়েন, নিজের সাপেক্ষে অন্যদের বা অন্যদের সাপেক্ষে নিজের আপেক্ষিক অবস্থা বুঝে নেওয়ার ফুরসত না থাকে তাহলে আপনি অঙ্কের ভাষায় একটা ধ্রবক হয়ে যাবেন। এই ট্রেনের মানুষগুলোও আর বাইরের দিকে তাকায়না, ট্রেনের মধ্যেকার জীবনযাপনে তারা এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে বাইরের দিকে তাকাতেই ভুলে গেছে। আর যে মুহূর্ত থেকে তারা বাইরে তাকানো বন্ধ করেছে তখন থেকেই এই ট্রেন আর গতিশীল বাহন নেই, গতি হারিয়ে একটা ধ্রুবক বসতিতে পরিণত হয়ে গেছে। তারা ট্রেনের গতিজাড্যের সঙ্গে নিজেদের এমনভাবে মানিয়ে নিয়েছে যে এখন ভুলতে বসেছে তারা এখন একটা গতিশীল যানের সওয়ারি। তাই ফেলে আসা জীবনের মতই হাঁসি-কান্না-দুঃখ-আনন্দ-মান-অভিমান সব কিছু নিয়েই নিশ্চিন্ত-নিরুদ্বেগে দিনগুলো ট্রেনের ভিতর কেটে যেতে লাগলো। আর যত দিন যেতে লাগলো, আমি এই সর্বহারা, গরিব, অর্ধশিক্ষিত মানুষগুলোর মধ্যে প্রকৃত মনুষ্যত্বের সন্ধান পেতে লাগলাম। হ্যাঁ এরা ঝগড়া করে, গালাগালি দেয়, মাঝেমাঝে অল্পবিস্তর হাতাহাতিও করে ফেলে, কিন্তু তা বড় সাময়িক, সেটা ছাড়া জীবনের স্বাভাবিক প্রবাহ কেমন যেন আলুনি লাগে। ভালোবাসতে এদের জুড়ি নেই। আপনাকে একবার ভালো লেগে গেলে আপনার জন্যে জীবন দিতেও কুন্ঠিত হবেনা। কয়েকদিনের মধ্যেই ওরা ধরে ফেলেছে আমার ব্যাগে খুদ-কুঁড়োও নেই আবার অন্যদিকে রান্নাবান্নার কোনো সাজসরঞ্জামও নেই। সেই মুহুর্ত থেকেই আমি বারোয়ারী হয়ে গেছি। প্রথম দুয়েকদিন মাসিমার কাছে খেয়েছি, তারপর দায়িত্ব তুলে নিয়েছে সমগ্র কামরা তথা সমগ্র ট্রেন। ইতিমধ্যেই আমার পরিচয় বেশ পাখা মেলে উড়ে বেরিয়েছে এক কামরা থেকে অন্য কামরায়। আমি ইচ্ছে করে আমার সত্য পরিচয় দিইনি। কারণ আমি বুঝতে পারছি এই মিথ্যে পরিচয়ে ট্রেনের মধ্যে একটা ডিসিপ্লিন তৈরি হয়েছে, সেটা ভয়, সমীহ যেকোনো কিছু থেকেই হোকনা কেন। আশেপাশের কম্পার্টমেন্টের বেশ কয়েকজনের সাথে আলাপ হয়েছে। সবথেকে বড় কথা মানুষ যেকোনো সমস্যা নিয়ে আমার কাছে ছুটে আসছে। বেশ এক নতুন কাজ জুটেছে, সালিশি শোনা। আমার যেটা ভালো লাগছে সেটা হলো আমার ওপর মানুষের বিশ্বাস, ভরসা আর ভালোবাসা অনেক বেড়ে গেছে৷ কদিনের মধ্যেই সমস্ত যাত্রী আমাকে গার্জিয়ান ভেবে ফেলেছে। আগে টয়লেটে যাওয়া, যেখানে সেখানে নোংরা ফেলা, শোওয়ার জায়গা নিয়ে ঝামেলা বেধেই থাকতো, এখন সেটা বন্ধ হয়েছে। এখন তারা নিজেরাই কাজের দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছে। যেই মুহূর্ত থেকে এই সাময়িক থাকার জায়গাটি একটা গতিশীল ট্রেন থেকে বদলে গিয়ে শান্ত, সুস্থির একটা বাসস্থানে পরিণত হয়েছে তখন থেকেই তাদের আচার-আচরণ বদলে গেছে। ট্রেনটিকে তারা ঘর ভাবতে শুরু করেছে, ভালোবাসতে শুরু করেছে।

 এই কদিনে আকাশের ব্যবহারে একটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখলাম। আগেকার মনমরা হাবভাব একদম ঝেড়ে ফেলে এখন সে অনেক সাবলীল। প্রথম কদিন সে কিছুই রাঁধেনি, ঝোলায় যা ছিল তাই দিয়েই চালাচ্ছিলো, এখন সে রান্নায় মন দিয়েছে। একদিন আমাকে চমৎকার ডিমের ঝোল খাইয়ে গেছে। তবে ওকে রোজ রাঁধতে হয়না, বেশিরভাগ দিনই বৈরাগী গিন্নির কাছেই সে খাওয়াদাওয়া সারে। আমি দেখেছি ওরা দুজন ছেলেটিকে সন্তানস্নেহে কাছে বসিয়ে খাওয়ায়। আমি দূর থেকে দেখি আর মনে মনে অপার শান্তি পাই। আকাশ আরেকটা দারুন কাজ শুরু করেছে, সে কামরার সমস্ত বাচ্ছাগুলোকে নিয়ে একটা স্কুল খুলেছে, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১১টা। আর কি সুন্দর ভাবে বাচ্চাগুলোর সাথে মিশে গেছে, তারা তার কোলের উপর, ঘাড়ের ওপর, পিঠে হেলান দিয়ে বসে, দাঁড়িয়ে পড়ে, লেখে, ছবি আঁকে। একদিন দেখি যাতায়াতের রাস্তায় বাচ্চাগুলো সারি সারি বসে স্লেটে কিসব লিখছে.....আমি পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বুঝলাম 'শ্রুতিলিখন'-এর ক্লাস চলছে। আকাশ তার স্মৃতি থেকে ঈশপের গল্প বলে চলেছে আর বাচ্চাগুলো বানান করে করে সেগুলো লিখছে। আমার সঙ্গে চোখাচুখি হতে একগাল হাঁসলো, আমি ওকে থাম্ব্স আপ দেখিয়ে নিজের কাজে গেলাম। ওইদিনই বিকেলবেলা আকাশ আমার কাছে এল, ওর আবদার বাচ্চাগুলোর জন্যে কিছু বই, স্লেট, চকপেন্সিলের ইত্যাদির ব্যবস্থা করে দিতে হবে। বেশিরভাগ পরিবারই এই অনির্দিষ্ট সফরে বেরোবার সময় বই-স্লেট-পেন্সিলকে আবশ্যকীয় মনে করেনি। এছাড়া আকাশের আরেকটা দাবি, বেশ কিছু বয়সে বড় মানুষজনও আকাশের কাছে লেখাপড়া শেখার ইচছা প্রকাশ করেছে। সেটা করতে গেলে তাদের জন্যে কিছু কাগজ-পেনের ব্যবস্থাও আমাকে করতে হবে। আমি তো প্রমাদ গণলাম। আপাতত আকাশকে 'দেখছি-দেখবো’ বলে সাময়িক পরিত্রাণ পাওয়া গেছে, কিন্তু ও যে নিষ্ঠার সাথে কাজটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেদিক থেকে ওকে বেশিদিন 'হচ্ছে-হবে' বলে চালানো যাবেনা। ও কাজটাকে ভালোবেসে ফেলেছে, এক সময় পড়াশোনা থেকে দূরে চলে গিয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে যে অন্যায় করেছে, আজ এই পবিত্র ব্রত পালনের মধ্যে দিয়ে সে যেন প্রায়শ্চিত্ত খুঁজছে। তার এই আন্তরিক চেষ্টাকে কুর্নিশ জানানো উচিত। এইটুকু চাওয়া নিয়ে ছেলেটি বহু আশা করে আমার কাছে এসেছে, ওকে নিরাশ করার কথা ভাবলেও নিজেকে খুব অসহায় লাগছে। আমার কাছে পয়সা আছে কিন্তু এ ট্রেন থামানোর কোনো মন্ত্রগুপ্তি আমার জানা নেই। সরকারের লোক হিসেবে পরিচয় দেওয়ার পর যে এইভাবে বারবার আমাকে পরীক্ষার সামনে পড়তে হবে কে জানতো! আমি আকাশের কাছে কয়েকটা দিন সময় চেয়ে নিলাম। একটা দিন কেটে গেল মাথায় কিছুই এলোনা। পরের দিন আচম্বিতে একটা আশার আলো স্মৃতিতে ঝলক দিয়ে উঠলো। মনে পড়লো এক বন্ধুর কথা, কলেজে যে আমার সহপাঠী ছিল। বেশ কয়েকবছর আগে একবার হঠাৎ নিউ মার্কেটে দেখা। তখনই শুনেছিলাম রেলের এক বড় পোস্টে আছে, সেসময় ফোন নাম্বারও আদানপ্রদান হয়েছিলো। তড়িঘড়ি ফোনের কন্ট্যাক্ট লিস্ট থেকে নাম খুঁজে কল করলাম। কপাল জোরে একবার রিং করেই লাইন পেয়ে গেলাম। আমি সব কিছু বিশদে বললাম, ও আমার পাগলামি শুনে বন্ধুসুলভ গালাগালিও দিলো আবার আমার এই দায়িত্ববোধে খুশিও হলো। ও আমাকে আশ্বস্ত করলো এ ব্যাপারে আমাকে যতটা সম্ভব সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, ও জানালো রেলমন্ত্রকের বাজেটে ইতিমধ্যেই এই অনিশ্চিতপুরগামী ট্রেনের জন্যে একটা বড় অঙ্কের টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সে আমাকে কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে বললো। আমি এক্ষুনি কাউকে কিছু বললাম না। আকাশকে একটু এড়িয়ে এড়িয়ে চললাম। শরীর জুতের নেই এই বাহানায় বেশিরভাগ সময়ই শুয়ে বসে কাটালাম। কয়েকদিন পর গাড়ির সমস্ত যাত্রীকে স্তম্ভিত করে এই প্রথমবারের জন্যে ট্রেনটা একটা বড় জংশনে থামলো। সবাইয়ের মধ্যে ভয়, আনন্দ, উৎসাহ সমস্ত অনুভূতিগুলো একসাথে খেলে গেল। ভয়ের কারণ, সরকারি লোকেরা এসে যদি জোর করে সবাইকে এখানেই নামিয়ে দেয়। আবার স্বস্তি ও আনন্দের কারণ, এতদিন পর একটা নতুন জায়গা, নতুন দোকানপাট, নতুন মানুষদের স্থিতাবস্থায় দেখতে পাওয়া। এ যেন অনেকটা দীর্ঘদিন জলপথ পেরিয়ে বন্দরে পৌঁছনো জাহাজকর্মীদের বাঁধনহারা আনন্দ। কিছুক্ষণের মধ্যেই রেলকর্মীরা মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস এবং ইউনিফর্ম পরে জীবাণুনাশক পদ্ধতি অবলম্বনে গোটা ট্রেন, টয়লেট পরিষ্কার করলো। খাবার জল এবং স্নান-বাথরুমের জল ট্যাঙ্ক ভরে দিলো। তারপর এল রেশন, চাল-ডাল-তেল-নুন-মশলা, সব্জি ইত্যাদি। একটা বড় ভ্যানে ডিম এল, এবং পরিবার পিছু সেই ডিমের সুষম বন্টন হলো। আমি অবাক চোখে সব দেখছি- গোটা ট্রেনের লোক আমার কাছে আসতে চাইছে, দূর থেকে হাত জোড় করে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন। তখনও অবাক হওয়ার বাকি ছিল। সব কিছু মিটে যেতে এক রেলওয়ে অফিসার সিকিউরিটি সমেত জনতার মধ্যে দিয়ে পথ করে এগিয়ে এলেন। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করে আমার দিকে তাঁর নজর পড়লো। কিছুটা কাছে এসে হাত তুলে নমস্কার জানালেন। আমি প্রতিনমস্কার জানালাম কিন্তু কি হচ্ছে বুঝতে পারলামনা। আমার বোকা বোকা মুখের দিকে চেয়ে উনি আমার বন্ধুর নাম উল্লেখ করে আমাকে ধন্যবাদ জানালেন। কিছু পরে একটা বড় ট্রাভেল ভ্যানে করে উপস্থিত হলো বই-খাতা-পেন-পেন্সিল। যাওয়ার আগে এই আশ্বাসও দিয়ে গেলেন যে নির্দিষ্ট দিন পর পর বিভিন্ন স্টেশনে এই সাহায্য পর্যায়ক্রমে আসবে। আমি কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত হয়ে দূর থেকে শুধু হাত তুলে প্রণাম জানাতে পারলাম। খুব ইচ্ছে করছিল কাছে গিয়ে অফিসারের দুই হাত জড়িয়ে ধরে নিজের মাথায় রাখি। কিন্তু এই দুঃসময় মানুষে মানুষে শারীরিক দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। ট্রেন ছেড়ে দিলো -- আমি আরেকবার আমার বন্ধু আর সমস্ত রেলওয়ে কর্মীভাইদের উদ্দেশ্যে দুহাত তুলে প্রণাম জানালাম।

                                            (ক্রমশঃ……….)


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ