সর্বশেষ

10/সর্বশেষ/ticker-posts

লাল পাহাড়ের দেশে: চতুর্থ পর্ব

 

ডঃ গৌতম সরকার


একদিনের মধ্যে জায়গাটার পরিবর্তন দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কে বলবে, কালকে এই চত্বরে এইসময় একটা প্রাণীও ছিলোনা। আজ একদম ষোল ষোল বত্রিশ আনা চমক। বাসের সম্মিলিত গর্জনের সাথে সাথে যাত্রীদের ছুটোছুটি, চেঁচামেচি, দোকানদার-ফেরিওয়ালার ডাক সব মিলিয়ে এই সাতসকালে হাজারীবাগ সিটি বাসস্ট্যান্ড সরগরম। এখানে পৌঁছে বেশিক্ষণ সময়ক্ষেপের সময় নেই। মুহুর্মুহু বিভিন্ন ঠিকানায় বাস বেরিয়ে যাচ্ছে। ভদ্রলোক আমাদের গন্তব্যের বাস দেখিয়ে দিয়ে টা টা বাই বাই করে নিজের বাসের সন্ধানে দৌড়লেন। আমরা ধীরেসুস্থে বাসে উঠে বসলাম। এখনও তেমন প্যাসেঞ্জার আসেনি, পুরো বাসই খালি। পছন্দের জায়গা বেছে নিয়ে ব্যাগ রেখে নিচে নেমে এককাপ করে চা খেলাম। আস্তে আস্তে লোকজনের ভিড় বাড়তে লাগলো। মিনিট পনেরো পর গাড়ি বারো আনা ভরে গেল, বাস ছেড়ে দিল। ডিপো ছাড়িয়ে শহরের মধ্যে দিয়ে বাস চলতে লাগলো। ফুলের পাপড়ি মেলার মত ধীর লয়ে হাজারীবাগ শহরের ঘুম ভাঙছে। একআধটা দোকান খুলেছে, জলছড়া দিয়ে দোকান ও সংলগ্ন জায়গা ঝাড়ু দিতে লেগেছে। কাল হোলির হ্যাংওভার কাটিয়ে আজ পুরো শহরের জাগতে একটু দেরি হবে, বলাই বাহুল্য। বাস দাঁড়াতে দাঁড়াতে যাত্রী তুলতে তুলতে চলেছে। শহর ছাড়তে বাস পুরো ভরে গেল আর বাসের গতিও বেড়ে গেল। বিহারের শহর আর গ্রামের মধ্যে তফাতটা খুব চোখে পড়বে। এতক্ষনের ইঁট-কাঠ কংক্রিটের দুনিয়া বদলে গিয়ে মাটির দেওয়াল, খাপড়ার চালওয়ালা পৃথিবীতে ঢুকে পড়লাম। মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদও অনেক জীর্ণ, বিবর্ণ হয়ে পড়ল। একচিলতে শুষ্ক, পাথুরে জমির একটু উর্বরতার সন্ধানে পশু-মানুষের প্রাণান্তকর পরিশ্রমও চোখে পড়ল। অন্যদিকে চোখের কিছুটা শান্তি মিলল অনেক সবুজ গাছপালা দেখে। কিছু পুকুর, বিলও আছে। প্রকৃতির আপন খেলা দেখতে দেখতে সময় কেটে যেতে লাগলো, আর আমরাও গন্তব্যের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে লাগলাম।





দুদিনের দমবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে দুজনের মনই ফুরফুরে। এবারের ভ্রমণে প্রথম থেকেই একটার পর একটা বাধা পড়ছে। রীতিমতো একটা বড় বাধা কেটে বেরিয়ে এসে গন্তব্যের দিকে যত এগিয়ে যাচ্ছি তত উচ্ছাস প্রকাশ করে ফেলছি। রাঁচি গিয়ে সরকারী বাস স্ট্যান্ড থেকে একটা বাস ধরে চোঁ করে নেতারহাট। না না..মোটেই চোঁ করে যাওয়া যাবেনা। প্রায় ২০০ কিলোমিটার রাস্তা, পাঁচ-ছ ঘন্টা সময় লাগবে। যাই হোক, বাসে উঠে পড়তে পারলে আর কি চিন্তা! যতক্ষণই লাগুক, একটা সময়ে তো পৌঁছবোই। তারপর শুধু মজা আর মজা। উচ্ছাস চেপে রাখতে পারছিনা। চোখের সামনে দিগন্ত খোলা বাসন্তী উপত্যকার দ্রাঘিমা জুড়ে বাদামী পাহাড়ের ঐকান্তিক হাতছানি আলেয়ার মত ডাক দিচ্ছে। খালি মনে হচ্ছে, আর কখন রাঁচি পৌঁছবো। শেষমেষ রাঁচি পৌঁছতে পৌঁছতে দুপর এগারোটা পেরিয়ে গেল।


বাস থেকে নেমে কোনোদিকে না তাকিয়ে তল্পিতল্পা নিয়ে দৌড়লাম টিকিট কাউন্টারের দিকে। কাউন্টারের বাইরে কোনো ভিড় নেই, গুমটির ভিতর এক প্রবীণ মানুষ বসে আছেন। মুখ নিচু করে জানলার ফুটো দিয়ে নেতারহাট যাবার বাসের খবর নিতেই ভদ্রলোক কিছুক্ষণ চুপ করে আমাদের ভালোভাবে ঠাহর করলেন। তারপর জিজ্ঞাসা করলেন, “নেতারহাট যাওয়া হবে কেন?” আমরা দুজনে তো হতভম্ব, টিকিট পেতে গেলে এধরণের প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় জানা ছিলনা। আমাদের ইতস্ততঃ ভাব লক্ষ্য করে নিজেই জিজ্ঞাসা করলেন, “বেড়াতে!” আমরা ঘাড় নেড়ে সায় দিই। উনি একটু নড়েচড়ে বসে অনেকটা নিচু হয়ে চোখে চোখ রেখে বললেন, “আজকের শেষ বাস চলে গেছে। আজ আর কোনো বাস যাবেনা”। শুনে আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। ভগবান! এ অভাগাদের সঙ্গে এ কি খেলা তুমি খেলছ! আমাদের মতো অর্বাচীন, অসহায়, নাদাল দুটো বাচ্ছার সাথে তোমার এ খেলা কি শোভা পায়! আমরা আমতা আমতা করে বলি, “তার মানে, এখন তো সবে এগারোটা, এরই মধ্যে শেষ বাস চলে গেল?” ভদ্রলোক এবার গুছিয়ে বসে উকিলের মত সওয়াল শুরু করলেন, “এই এলাকার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্বন্ধে আপনাদের কোনো ধারণা আছে কি?” প্রমাদ গণি, সত্যিই এ ব্যাপারে আমাদের জ্ঞান একেবারেই নেই। আমাদের মৌনতা বেশিক্ষণ দীর্ঘায়িত না করে বলে চললেন, "যে অঞ্চলে যাচ্ছেন সেটা একটা মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা, ঘাঁটিও বলতে পারেন। দুদিন আগে মাওবাদীরা একটা সরকারি বাস জ্বালিয়ে দিয়েছে। এলাকার মানুষ, এমনকি পর্যটকদেরও হেনস্থা করেছে।" আমরা বড় বড় চোখ করে শুনি। উনি বলে চলেছেন, "সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে বাসগুলো ওখানে বিকেল চারটার পর পৌঁছত সেগুলো আপাতত চলবেনা। তাই আজকের শেষ বাস সকাল সাড়ে দশটায় ছেড়ে চলে গেছে।" আমাদের তখন মেজাজ খিঁচড়ে গেছে। প্রতি পদে পদে এই বাধা আর নিতে পারছি না৷ ভদ্রলোকের কথা শুনে ভয় পাওয়ার জায়গায় জেদ আরও বেড়ে যাচ্ছে। মরিয়া হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, “আচ্ছা রাঁচির আর কোথাও থেকে নেতারহাট যাওয়ার বাস ছাড়েনা? কোনো প্রাইভেট বাস?” ভদ্রলোক গুম মেরে গেলেন। কিছুক্ষণ পর মুখ খুললেন, “তোমার কি মনে হল এতক্ষন আমি তোমাদের সঙ্গে মাজাকি করছি! বাপ-মায়ের ছেলে তাদের কাছে ফিরে যেতে চাইলে যাওয়ার ভাবনা বন্ধ কর। এখানেই দুদিন থেকে যাও, রাঁচিতেও তো অনেক কিছু দেখার আছে। আর এখানে মাওবাদী ঝামেলাও কম।" ভদ্রলোকের জ্ঞানবানী আর সহ্য হলোনা, ছিটকে সরে এলাম। দূরে যাত্রীদের বসার একটা শেড আছে। নিজেদের টেনে-হিঁচড়ে বেঞ্চে গিয়ে বসলাম। ভাবতে হবে, এবার কি করবো! দুজনের মাথাতেই হাজার চিন্তা ঘোরাফেরা করছে, কিন্তু কংক্রিট কিছু মাথায় আসছেনা। চুপচাপ বসে রইলাম। সেইসময় এক ভদ্রলোক এসে আমাদের বেঞ্চে বসলেন। আমরা অত খেয়াল করলামনা, নিজেদের পোড়া কপালের চিন্তাতে মশগুল। ভদ্রলোক গলাটা একটু ঝেড়ে নিয়ে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনারা কি নেতারহাট যেতে চাইছেন?” আমরা আমাদের নির্বাক মুখদুটো ওনার দিকে ঘুরিয়ে দিলাম। ভদ্রলোক একটু লজ্জা পেয়ে কিন্তু কিন্তু করে বললেন, “না মানে আপনারা যখন কাউন্টারে কথা বলছিলেন তখন কিছু কথা কানে এলো কিনা..”

পবিত্র কথা বলল, “হ্যাঁ যেতে তো চাই। কিন্তু বাস তো নেই। আর ভদ্রলোক ওখানকার পরিস্থিতির কথা ভেবে যেতে বারণ করছেন”।

ভদ্রলোক পবিত্রর কথা শুনে নিজের মনেই ঘাড় নাড়তে লাগলেন। তারপর বললেন, “আপনারা কি ভয় পেয়েছেন?”

আমি বলি, “ভয় ঠিক নয়, তবে বিদেশ বিভূঁইয়ে সত্যিকারের পরিস্থিতি কি আমরা তো জানিনা”।

ভদ্রলোক বললেন, “ঠিক, তবে আমার কথা বিশ্বাস করলে আমি কিছু বলতে পারি”।

আমি বললাম, “আপনি?”

“দেখুন আমার বাড়ি নেতারহাটে। আপনাদের সাথে যেচে আলাপ করে এইসব কথা বলছি এতে আমার কিছু স্বার্থ আছে অস্বীকার করবোনা। আবার নিজের স্বার্থ রাখতে আপনাদের মত দুজন অল্পবয়সী, অচেনা ছেলের কাছে মিথ্যে কথাও বলবোনা”৷

পবিত্র বলে উঠল, “কিন্তু আপনি কি বলতে চাইছেন আমরা কিছু বুঝছিনা”৷

ভদ্রলোক সৌম্যদর্শন, বয়সও পঞ্চাশের উপর। পোশাক-পরিচ্ছদ ধোপদুরস্ত, তবুও আমি সতর্ক হই৷ কতরকম মানুষ কতরকম ফন্দিফিকির নিয়ে ঘোরাফেরা করে, তাই একটু ক্রিটিক্যাল চোখে ভদ্রলোকের দিকে তাকাই। ভদ্রলোক পবিত্রর কথায় একটু থেমে বলেন, “হ্যাঁ আমি পরিষ্কার করেই বলছি। আর আমাকে বিশ্বাস করলে আপনাদের হাতে সময়ও বিশেষ থাকবেনা৷ শুনুন, আমার নেতারহাটে একটা হোটেল আছে। সেখানে আমার স্ত্রী আর বাচ্ছা থাকে। দুটি স্থানীয় ছেলে দেখাশোনা করে। একটা চিঠি আমার স্ত্রীকে পৌঁছনো খুব জরুরী৷ এখানে একটা কাজ নিয়ে এসেছি, কয়েকদিন থাকতে হবে। আপনারা যদি যেতে চান, কিছু দূরের বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রাইভেট বাস ছাড়ে। কিন্তু দুপুর বারোটায় শেষ বাস ছেড়ে যায়। আমাদের হাতে আধা ঘন্টা সময় আছে। দুটো অটো পাল্টিয়ে যেতে হবে। রাজি থাকলে এক্ষুণি চলুন। আমরা কোনো কথা না বলে দুজনে তড়াক করে লাফিয়ে উঠলাম। চুলোয় গেল মাওবাদী ভয়, অচেনা-অপরিচিতকে চট করে বিশ্বাস না করার শিক্ষা; পরের কয়েকটা মুহুর্ত কিভাবে কেটে গেল নিজেরাই বুঝলামনা। ভদ্রলোকের সাথে সেই জনবহুল শহরে দৌড়ে দৌড়ে দুটো অটো ধরে বেশ কয়েক কিলোমিটার পথ আর বুকভর্তি টেনশন পেরিয়ে যখন নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছলাম তখন নেতারহাটগামী শেষ বাসটির চাকা গড়াতে শুরু করেছে। ভদ্রলোক হাঁকডাক করে বাস থামিয়ে আমাদের তুলে দিলেন, পকেট থেকে স্ত্রীকে লেখা চিঠির খামটি দিতে ভুললেন না। আমরাও ইতিমধ্যে ওনার কাছ থেকে হোটেলের নাম আর ঠিকানা জেনে নিয়েছি। ওনার দিকে কৃতজ্ঞতার হাত নাড়াতে না নাড়াতেই বাস গতি নিল। 

    

 যার শেষ ভালই তার সব ভালো- প্রবাদবাক্যটি মনে পড়ছে। দুজনেই বিন্দাস খুশ...পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হতে আত্মবিশ্বাস তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। হঠাৎ করে ভদ্রলোকের দৈব উপস্থিতি ঈশ্বরের করুণা ছাড়া আর কি হতে পারে! বাসে বসার জায়গাও পেয়ে গেলাম, সিটগুলো আরামদায়ক। পাঁচ-সাড়ে পাঁচ ঘন্টার জার্নিতে একটু আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা না হলে মুশকিল। ইতিমধ্যে আশপাশ বদলাতে শুরু করেছে। শহর ছেড়ে বাস এখন গ্রামীন পথ ধরে ছুটছে। সাঁই সাঁই করে পেরিয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট জনপদ, জমি, পুকুর, দীঘি। এই ভরা দুপুরে চাষীরা জমিতে কাজ করছে, মেয়েরা জলায় গেঁড়ি, গুগলি তুলছে। বেশ কিছুটা জলা জুড়ে পানিফল ফলানো হয়েছে। বেগুনি ফুল ফুটেছে, ফল আসতে দেরি আছে। এই অঞ্চলটা একদম সমতল, দূর দিগন্তের সুদূরতম সীমানাতেও পাহাড়ের কোনো সিল্যুয়েট চোখে পড়লোনা৷ চারঘন্টার ওপর পথ সমতল ভূমি ধরে; শেষ এক থেকে দেড় ঘন্টায় চড়াই পথ ধরে পাক খেতে খেতে ওপরে ওঠার মজা। মাঝে একটা জায়গায় আধা ঘন্টা ব্রেক পেয়ে ভাত খেয়ে নিয়েছি। জার্নির শেষ ভাগে ভাতঘুমের তাড়সে চোখ খুলে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ছিল। কিন্তু চড়াই পথ শুরু হতেই দুজনের চোখ থেকে ঘুম পুরোপুরি উধাও। পাহাড়ে চড়ার উত্তেজনা তখন তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে অনুভব করতাম। তাও ওই শুকনো পাহাড়, হিমালয় দর্শন তখন অনেক দেরী। একসময় বাসটা শাল, শিমুল, পলাশ, মহুয়া গাছে ছাওয়া একটার পর একটা পাকদন্ডী পেরোতে পেরোতে একজায়গায় এসে থামলো। ইতিমধ্যে বাসের প্রায় সব লোক নেমে গেছে। আমরা বাদে দুয়েকজন প্যাসেঞ্জার, ড্রাইভার আর কন্ডাক্টর।

সূর্য ডুবে গেছে কিছুক্ষণ, গোধূলির লাল আলো মেদুর ভাস্কর্য রঙে রাঙিয়েছে চারপাশ। প্রকৃতি দেখতে দেখতে পরিবেশের ভাবনা মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল৷ বাস থেকে নামতেই মুহূর্তের মধ্যে বাসটা গতি বাড়িয়ে উৎরাইয়ে কোথায় হারিয়ে গেল। পলক ফেলতে না ফেলতেই আমাদের সাথে যারা নামলো তারা কোথায় হারিয়ে গেল। আশপাশে একটা জনমানবও নেই, দোকানপাট তো দূরের কথা। অন্ধকার ক্রমশ ঘন হচ্ছে, সাথে আমাদের বুকে ভয়ের জয়ঢাক দ্রিদিম দ্রিদিম বাজতে শুরু করল। এই নির্জন অন্ধকারে গাছের ফিসফিসানি আর দুয়েকটা পাখির ঘরে ফেরার ডাক ছাড়া কোনো আওয়াজ নেই। এই জায়গাটাই এলাকার উচ্চতম জায়গা বলে মনে হচ্ছে, আর এখানে এসেই পিচ রাস্তাটা শেষ হয়ে গেছে। মনে মনে ভেবে নিলাম, হোটেল বলো, বসতি বলো, এর উপরে হতে পারেনা। রাস্তা ছেড়ে দুজনে হাত ধরে অন্ধকার জঙ্গুলে উৎরাই বেয়ে গড়গড়িয়ে নিচের পাকদন্ডীতে নামলাম। এখানেও কিছু চোখে পড়লোনা। আবার একটা উৎরাই পেরিয়ে নামার পর দূরে কয়েকটা মিটমিটে আলো চোখে পড়ল। কিছুটা এগিয়েই দুজনে থমকে দাঁড়ালাম। তখনও কেউ কারুর হাত ছাড়িনি। অন্ধকারের মধ্যে চোখে পড়লো আন্দাজ পঞ্চাশ মিটার দূরে একটা জমাট অন্ধকার। ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম অন্ধকারটা নড়াচড়া করতে শুরু করেছে, মনে হলো অন্ধকার পিন্ডটা আস্তে আস্তে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। ভয়ে আমাদের নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার যোগাড়। রাঁচির সরকারি বাস গুমটির ভদ্রলোকের মুখটা চোখের সামনে ভাসতে লাগল। আমরা দুজনে দুজনের হাত ধরে দাঁড়িয়ে রইলাম। মনে হল চোখের সামনে দিয়ে অনন্ত সময় বয়ে চলছে।

                                                        (ক্রমশঃ….)

চিত্রঋণ: ইন্টারনেট


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ