সর্বশেষ

10/সর্বশেষ/ticker-posts

কবিতার মিছিল - রফিকুল নাজিম

 
রফিকুল নাজিম

নোনাজল
 
ক্রমশ বাড়ছে রোদের তেজ
পুড়ে যাচ্ছে মায়ার চৌকাঠ
যাপিত জীবন; গেরস্থালি মন
বুকের জমিন, ভাটি নদীর জল
গোলাপের পাপড়ি শুকিয়ে যাচ্ছে
এবং পানকৌড়ির ভেজা পালকও।

ফাল্গুনের উদাস দুপুর; হা–হুতাশ বাতাস পুড়ে যায়
বোটাখসা পাতা ঝরে যায়, মরে যায় অনাহূত সবুজ
কেবলই আমার মনে মেঘলা আকাশ, চোখে উজান নদী
তুমি মুছে না দিলে, এই খর রোদেও শুকাবে না
আমার চোখের নোনাজল।


আমার আমি
 
যতবার আমি আয়নার সামনে এসে দাঁড়াই
যতবার আমি আয়নায় নিজেকে খুঁজি,
ততবার কেবল তোমাকেই দেখতে পাই।
অথচ আয়নার পেছনে সিলভারের গাঢ় প্রলেপ...
আহা! শুধু আমাকে দেখি না আর!

 
চলে গেলে শোক কোরো না
 
আমি চলে গেলে শোক কোরো না
শোকে কি আর মানুষ ফেরে?
আমি চলে গেলে তুমি কেঁদো না
কাঁদলে কি আর মানুষ ফেরে?

কাঁদবে যদিই এখন কাঁদো
আমার জন্য মায়ায় কাঁদো
আমার তুমুল প্রেমে থাকো
তোমার তুমুল প্রেমে রাখো।

তা না হলে পাশ কেটে যাও
কুমিরের অশ্রু উজানে বাও।
চলে গেলে শোক কোরো না
কসম দিলাম—শোক কোরো না।

 
জঞ্জাল আক্ষেপ 
 
তারপর আক্ষেপের গলা টিপে টিপে তুমি খুন করো
ফেরার পথে পায়ে পিষে এসো তোমার যত আক্ষেপ
তারপর তুমি ফিরে আসো আমাদের প্রতীক্ষার দিনে
চলো বৃষ্টিতে ভিজে এক জন্মের আক্ষেপ মুছে দিই।
দেখো, কৃষ্ণচূড়ার পাপড়িতে ছেয়ে গেছে দিগন্তের পথ
সবুজ পাতার আড়ালে শিস দিচ্ছে মায়ার সেই পাখি
চলো, আমরা হাত ধরে হেঁটে যাই রাঙামাটির পথে পথে
যত দূর হেঁটে যায় জীবন ও প্রেম; পাশাপাশি-সমান্তরাল।

তারপর তুমি এক জন্মের সব আক্ষেপ মুছে ফিরে এসো
ফিরে এসো আমার এই আক্ষেপের চরাচরে; শূন্য বুকে।
জীবনটা আর কদিনেরই—বলো,
আমি চলে গেলে, তোমার আক্ষেপেরা জঞ্জাল হয়ে যাবে।

 
দুঃখগুলো আগাছার মত বাড়ছে 
 
বুকের খাসজমিতে দুঃখগুলো আগাছার মতো বাড়ে
কষ্টের দাবানলে পুড়ে ছাই হয় বুকের সবুজ মায়া
ছলনার সুনামিতে লন্ডভন্ড হয় বিশ্বাসের আঁতুড়ঘর
তবুও আমার এই দুচোখ নতুন দিনের ভোর খোঁজে 
মায়াবী আরশিতে খোঁজে নির্মোহ ঠোঁটের চারু হাসি, 
নদীর জোয়ার, ভাটা ও স্রোতের অঙ্ক কষে জীবন
পাখিদের মুখর সন্ধ্যায় খোঁজে নীড়ে ফেরার আবদার
অনাহূত দুঃখবোধ বিনাশের প্রার্থনায় নিমগ্ন থাকে মন
তবু পরগাছার মতো ব্যথারা গেঁথে যায় বুকের গভীরে;
গোপনে চুষে খায় আমার এই বেঁচে থাকার প্রাণরস।
তবু চোখ বলে—এসব অবাঞ্ছিত দুঃখ-কষ্ট সব মিছে;
চোখ টিপে মন বলে—সত্যি কেবল তোমাকে ভালোবাসা।
আহা! তোমার অবহেলায় মুখ থুবড়ে পড়ে পার্থিব সব ইচ্ছা।


সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ,
মাধবপুর, হবিগঞ্জ। 

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ